ফররুখ আহমদ
ফররুখ আহমদ একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী কবি। এই বাঙালি কবি ‘মুসলিম রেনেসাঁর কবি’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। তার কবিতায় বাংলার অধঃপতিত মুসলিম সমাজের পুনর্জাগরণের অণুপ্রেরণা প্রকাশ পেয়েছে। বিংশ শতাব্দীর এই কবি ইসলামি ভাবধারার বাহক হলেও তার কবিতা প্রকরণকৌশল, শব্দচয়ন এবং বাক্য প্রমিতার অনন্য বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। আধুনিকতার সকল লক্ষণ তার কবিতায় পরিব্যাপ্ত। তার কবিতায় রোমান্টিকতা থেকে আধুনিকতায় উত্তরণের ধারাবাহিকতা পরিস্ফুট। ” সাত সাগরের মাঝি ” কাব্যগ্রন্থে তিনি যে-কাব্যভাষার সৃষ্টি করেছেন তা স্বতন্ত্র এবং এ-গ্রন্থ তার এক অমর সৃষ্টি।
শিক্ষাজীবন,
ফররুখ আহমদ খুলনা জিলা স্কুল থেকে ১৯৩৭ সালে ম্যাট্রিক এবং কলকাতার রিপন কলেজ থেকে ১৯৩৯ সালে আই.এ. পাস করেন। এরপর স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শন এবং ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি বামপন্থী রাজনীতিতে ঝুঁকে পড়েন। তবে চল্লিশ-এর দশকে তার রাজনৈতিক বিশ্বাসে পরিবর্তন আসে। তিনি ভারত বিভাগ তথা পাকিস্তান আন্দোলন সমর্থন করেন।
কাব্যগ্রন্থ,
সাত সাগরের মাঝি (ডিসেম্বর, ১৯৪৪) সিরাজাম মুনীরা (সেপ্টেম্বর, ১৯৫২) নৌফেল ও হাতেম (জুন, ১৯৬১)-কাব্যনাট্য মুহূর্তের কবিতা (সেপ্টেম্বর, ১৯৬৩) ধোলাই কাব্য (জানুয়ারি, ১৯৬৩) হাতেম তায়ী (মে, ১৯৬৬)-কাহিনীকাব্য নতুন লেখা (১৯৬৯) কাফেলা (অগাস্ট, ১৯৮০) হাবিদা মরুর কাহিনী (সেপ্টেম্বর, ১৯৮১) সিন্দাবাদ (অক্টোবর, ১৯৮৩)
দিলরুবা (ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪)
শিশুতোষ গ্রন্থ,
পাখির বাসা (১৯৬৫) হরফের ছড়া (১৯৭০) চাঁদের আসর (১৯৭০) ছড়ার আসর (১৯৭০) ফুলের জলসা (ডিসেম্বর, ১৯৮৫) ইত্যাদি।
পুরষ্কার,
১৯৬০ সালে ফররুখ আহমদ বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। কবি ফররুখ আহমদ ১৯৬৫ সনে প্রেসিডেন্ট পদক প্রাইড অব পারফরমেন্স এবং ১৯৬৬ সালে পান আদমজী সাহিত্য পুরস্কার ও ইউনেস্কো পুরস্কার। ১৯৭৭ ও ১৯৮০ সালে তাকে যথাক্রমে মরণোত্তর একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়।
কবির জন্মদিনে বুকলাইন পরিবার শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করে তার বিদ্রোহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।