শাহ্ আলম ও রিয়াদ মো. চৌধুরীর নেতৃত্বে ফতুল্লা বিএনপি গঠনে হতে পারে সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্যতা

মো. সেলিম মুন্সি : ফতুল্লা থানা বিএনপি’র দ্বায়িত্ব পাওয়ার মতো যে কজন যোগ্য প্রার্থী রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বিগত ফতুল্লা খানা বিএনপি’র সভাপতি মো. শাহ আলম ও বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী আলোচনার শীর্ষে। বিএনপির তৃণমূলের অধিকাংশ নেতা-কর্মীরা মনে করেন যদি তাদের নেতৃত্বে এদের অনুসারীদের নিয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপি ও অংগ সংগঠনগুলো গঠন করা হয় তাহলে পাবে সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্যতা। বর্তমানে শাহ্ আলম ফতুল্লা থানার সবচেয়ে ক্লিন ইমেজের নেতা যার গ্রহণ যোগ্যতা সকল নেতাকর্মীর কাছে সমান ভাবে সমাদৃত। তিনি ২০০৮ সালে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করে সামান্য ভোটের ব্যবধানে সারাহ হোসেন কবরির কাছে পরাজিত হন। তবে সেই ফলাফল এই অঞ্চলের দলমত সকলের কাছে বির্তকীত ছিলো। তারপর থেকে প্রায় ১০ বছর ফতুল্লা থানা, নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে মো. শাহ্ আলম সক্রিয় ছিলেন। পরে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার মামলা-হামলা ও গ্রেফতার এড়াতে তিনি রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা এখনো সমান ভাবেই আছে। শাহ আলম সমর্থক বহু নেতা কর্মী এখনও অপেক্ষা করছে শাহ্ আলমের রাজনীতিতে ফিরে আশার জন্য। যদি তিনি আবার রাজনীতিতে ফেরেন তবে ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ এমন কি নারায়ণগঞ্জ শহরের বিএনপি ও এর অংগ সংগঠন সমূহের সাংগঠনিক কার্যক্রম বেগবান হবে।
পাশাপাশি কর্মী বান্ধব রিয়াদ চৌধুরীর সাংগঠনিক দক্ষতা, ৫ই আগস্টের আগে ও পরে প্রমাণ করেছেন তিনি একজন দক্ষ সংগঠক। দলীয় সকল কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণসহ বর্তমানে ফতুল্লা থানা বিএনপি ও এর অংগ সংগঠনের বেশির ভাগ নেতা-কর্মীদের একত্রিত করে তাদের পাশে থেকে নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করেছেন।
৯০ এর দশকে ছাত্রদলের রাজনীতির মধ্যে দিয়ে রিয়াদ চৌধুরীর পথচলা শুরু এরপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। তিনি সব সময় সকল প্রতিকুলতার মধ্যে দিয়ে নিজেকে প্রমান করেছেন একজন জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে শহীদ জিয়ার সৈনিক হয়ে দেশ নেত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার নির্দেশ মতো রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে। ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও যোগ্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশী। ছাত্রদলের সোনালী ফসল হিসেবে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে তুলনা করা হয়। তিনি ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপি ও অংগ সংগঠন সমূহের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে যোগ্য নেতা হিসেবে বেশ এগিয়ে রয়েছেন। দলের প্রয়োজনে বিভিন্ন সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও ফতুল্লা থানা বিএনপি’র বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এবার ফতুল্লা থানা বিএনপির কমিটিতে মূল দ্বায়িত্ব পেতে পারেন যে কজন আলোচনার শীর্ষে থাকা গ্রহণ যোগ্য নেতা রয়েছেন তাদের মধ্যে রিয়াদ মো. চৌধুরী আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন।
মো. শাহ আলম ও রিয়াদ চৌধুরীকে ফতুল্লা থানা বিএনপি’র দ্বায়িত্ব দিয়ে তাদের অনুসারীদের নিয়ে ফতুল্লা থানা বিএনপি গঠনে হতে পারে নবীন-প্রবীনের সেতু বন্ধন। এবং সকল সমালোচনাকে পিছনে ফেলে অন্তকোন্দল আর বিতর্কের উর্ধ্বে উঠে ফতুল্লা থানা বিএনপির গতি বেগবান হবে বলে মনে করেন তৃনমূলের নেতাকর্মীরা।
গত ২ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয়েছে অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে। সেই সাথে ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মাসুকুল ইসলাম রাজিব, শরীফ আহম্মেদ টুটুল এবং সদস্য হিসেবে মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন রয়েছেন।
আর এই কমিটি ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথেই নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি নিয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়ে যায়।
নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমানে ফতুল্লা থানা বিএনপির কমিটিতে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য অবস্থানে রয়েছেন শাহ্ আলম, রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, একরামুল কবির মামুন, শহিদুল ইসলাম টিটু ও জাহিদ হাসান রোজেল। তবে শাহ্ আলম ও রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর সম্মন্বয়ে তাদের সকলকে নিয়ে কমিটি হলে সবচেয়ে বেশী গ্রহণ যোগ্য ও ব্যালেন্স কমিটি হবে বলে অনেকে মনে করেন অনেকে।
বর্তমানে ফতুল্লা বিএনপির যারা নেতৃত্বে আছেন তাদেরকে কেন্দ্র করে কয়েকটি বলয়ে গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে গত ৫ আগস্ট পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর বিভক্তি আরও ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। একাধিক বলয়ের আবির্ভাব হয়েছে। ফলে শাহ আলম ও রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে দ্বায়িত্ব দিলে সবদিক রক্ষা হবে, পাশাপাশি বিতর্ক মুক্ত হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৬ জুন শহিদুল ইসলাম টিটুকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক এবং রুহুল আমিন শিকদারকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ফতুল্লা থানা বিএনপির ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির তৎকালিন আহ্বায়ক মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও সদস্য সচিব গোলাম ফারুক খোকন স্বাক্ষরক্রমে এ কমিটির অনুমোদন হয়।
কিন্তু গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এই কমিটির ঘোষণার পর থেকেই ফতুল্লা থানা বিএনপিতে বিভক্তি দেখা দেয়। বিশেষ করে গত ৫ আগস্টের পর বিভক্তি আরও বেশি স্পষ্ট ও শক্তিশালী হয়েছে। একটি পক্ষ ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু ও সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর পক্ষে অপর একটি বলয়ে গিয়াস উদ্দিন নিজই নেতৃত্ব দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুলতান মাহমুদ এবং ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে হাছান আলীকে দিয়ে আর একটি বলয় তৈরী করেন। তারা কোনোভাবেই একপক্ষ আরেকপক্ষকে মেনে নিতে রাজী ছিলেন না।
এ পর্যায়ে শাহ আলম ও রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয় তবে সকল বিভক্তি অবসান হবে বলে মনে করেন তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মতে, বর্তমানে ফতুল্লা থানা বিএনপির শাহ আলম ভক্ত হাজার হাজার নেতা কর্মী নিঃস্কৃয় অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসবে এবং রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী নেতৃত্বে বহু নেতা কর্মী ইতিমধ্যে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে ফলে দল অনেক শক্তীশালী হবে।