ফতুল্লা পাইলট স্কুল থেকে প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত
মো. সেলিম মুন্সি : দাবিটা দীর্ঘদিনের। ফতুল্লা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের পদত্যাগ। ২০১২ সালে এই প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের সরকারি বিধান মোতাবেক চাকরির সময়সীমা শেষ হয়। তখন থেকেই তার প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে বিদায় নেয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু স্কুলের প্রয়োজনে তাকে স্কুল কতৃর্পক্ষ (ম্যানেজিং কমিটি) তাকে সপদে বহাল রাখেন। তাই আনোয়ার হোসেন ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক প্রধন শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ এই ১২ বছর বিদ্যালয়ে থেকে যান। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় তাকে রেখে দেয়ার প্রধান কারন হচ্ছে স্কুলের জমি সংক্রান্ত পুরনো কিছু মামলা ছিলো যাহা আনোয়ার স্যারকে দিয়ে পরিচালনা করা হতো। তার স্থলে নতুন কোন প্রধান শিক্ষক এলে স্কুল পরিচালনার পাশাপাশি মামলা পরিচালনার ভার না নেয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এছাড়া স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিক কিছু ঝামেলা থাকতো যাহা আনোয়ার স্যার খুব ভালো মতোই ম্যানেজ করতে পারতেন। তাই স্কুল কতৃপক্ষ ও এলাকাবাসী তাকে পরিবর্তন করলে মামলা পরিচালনা ও অন্যান্য বিষয়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে তা এই ভেবে তাকে দীর্ঘ এই সময় প্রধান শিক্ষক হিসেবে রেখে দেন।
তবে সহসাই প্রশ্ন উঠে কতো দিন। এছাড়া দীর্ঘ এই সময় তার বিরুদ্ধে বহু অনিয়মের অভিযোগ উঠে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে তিনি ও তার অফিস স্টাফদের খারাপ ব্যাবহার। বেতন, জরিমানা ও বিভিন্ন ফি দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, বিদায়ী শিক্ষকদের স্কুল থেকে পাওনা ঠিকমতো পরিশোধ না করে তাদের অহেতুক হয়রানি করাসহ অনেক অভিযোগ। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পড়াশোনার মান উন্নয়ন ও প্রশাসননিক অবনতি।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ ই আগষ্ট স্বৈরাচারী সরকারের পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পরে সারা দেশে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বেশ কিছু শিক্ষক পদত্যাগ করে। তারই সূত্র ধরে দাবি উঠে আনোয়ার হোসেনের ফতুল্লা পাইলট স্কুল থেকে পদত্যাগ।
রবিবার ২৫ শে আগষ্ট সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবিসহ তার পদত্যাগের দাবিতে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। সেই সময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য তুষার আহমেদ মিঠু, শিক্ষক নেতৃবৃন্দ প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেনকে নিয়ে জরুরি মটিং এ বসেন সেখানে সিদ্ধান্ত হয় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে যথাযথ নিয়মের মধ্যে দিয়ে আনোয়ার স্যার তার দায়িত্ব থেকে সরে যাবেন। এবং তাকে একটি বিদায়ী অনুষ্ঠান করে বিদায় দেয়া হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঐ জরুরি মিটিংয়ে থাকা বিশিষ্ট রাজনৈতিবীদ স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের পক্ষ থেকে রুহুল আমিন সিকদার।
এই ব্যাবারে বাংলাদেয়ীয়ার পক্ষ থেকে আনোয়ার স্যারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমারতো চাকুরীই নাই ৮ বছর ধরে পদত্যাগ করবো কি। স্কুলের প্রয়োজনে দায়িত্ব পালন করছি। আর আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী কিছু শিক্ষার্থীর কাছে জানতে চাইলে তারা জানান আগামী ১০ দিনের মধ্যে আনোয়ার স্যার পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।